সকালের সেশনেই বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের স্বপ্ন আরো উজ্জ্বল হয়ে যায়। ততক্ষণে পাঁচ উইকেট হারায় পাকিস্তান।তখনো বাংলাদেশের করা প্রথম ইনিংসের রানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে তারা। পাকিস্তানের খুঁড়িয়ে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইনিংস অবশেষে শেষ মাত্র ১৪৬ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবোয়ে, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে
টেস্ট জয়ের পর এবার পাকিস্তানের মাটিতেও টেস্ট ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশ টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়।
বৃষ্টিস্নাত ও মেঘলা আকাশ কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা পাকিস্তানের
শুরুর ব্যাটিংকে সমস্যায় ফেলেন। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তানের শুরুটা ভালো না
হলেও তারা ঠিকই সেই সংকট কাটিয়ে ওঠে। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে
তারা। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। এগিয়ে থাকে পাকিস্তানের
চেয়ে ১১৭ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের ব্যাটিং হলো ভয়ানক ভঙ্গুর। পঞ্চম এবং
শেষদিনের উইকেটে পাকিস্তানের ব্যাটিংলাইন ভেঙ্গে চুরমার। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়
তারা। ১০৫ রানে শুরুর ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। রিজওয়ান একপ্রান্ত আঁকড়ে ব্যাটিং ধস
থামানোর চেষ্টা চালান। করেন হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু তাকেও থামতে হলো ৫১ রানে। মিরাজের
স্পিনে বোল্ড হন রিজওয়ান। পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে। বাংলাদেশের সামনে
টেস্ট ম্যাচ জয়ের জন্য প্রয়োজন দাঁড়ায় মাত্র ৩০ রানের। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেশি সময়
নেয়নি বাংলাদেশ দল।
প্রথম ইনিংসে দাপুটে ব্যাটিং, বিশেষ করে মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের
ইনিংস বাংলাদেশকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বড় সাহস জোগায়। আর পঞ্চমদিন বোলাররা উইকেট থেকে
পাওয়া সুবিধা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে ধস নামান। দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান
ও মেহেদি হাসান মিরাজ বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। এই স্পিন জুটিতে বাংলাদেশ শিকার করে
৭ উইকেট। দলের তিন পেসারও ছিলেন শেষদিনের খেলায় দারুণ আক্রমণাত্মক মেজাজে।
ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, গেম প্ল্যানিং- সববিভাগেই এই ম্যাচে পাকিস্তানকে
ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ- যাকে বলে টপে থেকেই ম্যাচ জয়! সেই কীর্তি গড়েই রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট
জিতলো বাংলাদেশ।
দুই টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের লিড এখন ১-০। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সিরিজের
এই ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের আরো উঁচুতে তুললো বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয়
এবং শেষ টেস্ট ম্যাচও হবে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামেই। ম্যাচটি শুরু হবে ৩০ আগস্ট।
