ADD HERE

বন্যার পানি বিশুদ্ধকরণ উপায়

পানির অপর নাম জীবন, তবে সেটি হতে হবে বিশুদ্ধ। আর যদি বিশুদ্ধ না হয় তাহলে এটি হতে পারে নানা রোগের কারণ। বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত। আর এ সময় সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা, সেটি হলো বিশুদ্ধ পানির অভাব।

 


তাই আজকের প্রতিবেদনে কীভাবে পানি বিশুদ্ধ করা যাবে তা নিয়েই আলোচন।

১. ফুটিয়ে

পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরানো ও কার্যকর পদ্ধতির একটি হলো ফুটানো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পানি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটানো হলে এরমধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্লাস্টিকের পাত্রের পরিবর্তে কাচ অথবা স্টিলের পাত্র ব্যাবহার করতে হবে। তবে এ বন্যায় পানি ফুটিয়ে খাওয়া এক প্রকার অসম্ভব। তবে রয়েছে আরো উপায়।

২. ফিল্টার

ফিল্টারের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে।বাজারে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। যার মধ্যে অনেকগুলো জীবাণুর পাশাপাশি পানির দুর্গন্ধ পুরোপুরি দূর করতে সক্ষম। বাজারে মূলত দুই ধরণের ফিল্টার পাওয়া যায়। যার একটি সিরামিক ফিল্টার এবং দ্বিতীয়টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত রিভার অসমোসিস ফিল্টার। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ সিরামিক ফিল্টার ব্যবহার করে থাকে।

৩. ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লিচিং

পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক। যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানি বিশুদ্ধিকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি পরিশোধন করা যেতে পারে। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে এটি একটি কার্যকর পন্থা। সাধারণত প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট বা ১০ লিটার পানিতে ব্লিচিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। এভাবে পরিশোধন করা পানিতে কিছুটা গন্ধ থাকলেও সেটি পরিষ্কার স্থানে খোলা রাখলে বা পরিচ্ছন্ন কোন কাঠি দিয়ে নাড়াচাড়া করলে গন্ধটি বাতাসে মিশে যায়।

৪. পটাশ বা ফিটকিরি

এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এক্ষেত্রে পাত্রের ওপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলার পানি ফেলে দিতে হবে। অথবা পানি ছেকে নিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

৫. সৌর পদ্ধতি

যেসব প্রত্যন্ত স্থানে পরিশোধিত পানির অন্য কোনো উপায় নেই সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সৌর পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে দুষিত পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে কয়েকঘণ্টা তীব্র সূর্যের আলো ও তাপে রেখে দিতে হবে। এতে করে পানির সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়।

৬. আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি

পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি জীবাণু মুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ কার্যকরী একটা পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। বাজারের বেশ কয়েকটি আধুনিক ফিল্টারে এই আল্ট্রাভায়োলেট পিউরিফিকেশন প্রযুক্তি রয়েছে। তবে ঘোলা পানিতে বা রাসায়নিকযুক্ত পানিতে এই পদ্ধতিটি খুব একটা কার্যকর নয়। তাছাড়া এই উপায়টি কিছুটা ব্যয়বহুলও।

৭. আয়োডিন

এক লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিনের দ্রবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। তবে এই কাজটি দক্ষ কারো মাধ্যমে করতে হবে।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Add Placement