ফেনীসহ বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। তবে নোয়াখালীসহ দু–একটি স্থানে পানি বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। সেসব স্থানে পরিস্থিতি খানিকটা অবনতির দিকে। বাড়িঘর থেকে বন্যার পানি না সরায় অনেকে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রেই আছেন।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে শুকনা খাবার, পানি, ওষুধপত্র বিতরণ অব্যাহত আছে। তবে প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অনেকে ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। চার দিন পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল গতকাল দুপুর থেকে শুরু হয়েছে। তবে গতি ছিল কম।
বন্যায় এখনো দেশের ১১টি জেলায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দী। এসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮। সরকারি হিসাবে, এখন পর্যন্ত ২০ জনের মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৬ জন, চট্টগ্রামে ৫, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩ এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে মারা গেছেন। মৌলভীবাজারে নিখোঁজ আছেন দুজন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে গতকাল সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পানিবন্দী মানুষদের আশ্রয়ের জন্য ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় ১১ জেলায় ৭৪৮টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে
ফেনী শহরে, পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় পানি কমছে। তবে ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞাতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেশি। গতকাল সন্ধ্যায় ফেনী জেলা প্রশাসন এসব তথ্য জানিয়েছে।
ফেনী শহরে তিন দিন পর কয়েকটি সড়ক থেকে পানি নেমেছে। শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা ওমর বিন হোসাইন জানান, গত শুক্রবার তাঁর বাসার একতলা পানিতে নিমজ্জিত ছিল, গতকাল সকালে পানি সরে গেছে।
বিশুদ্ধ পানির খোঁজে শহরের ট্রাঙ্ক রোডে আসা একাডেমি এলাকার বাসিন্দা হারুন রশিদ জানান, গত দুই দিন সেখানে কয়েক ফুট উচ্চতার বেশি বন্যার পানি প্রবাহিত হয়েছে। এখন কমে নিচতলায় হাঁটুপানি রয়েছে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাউজানের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে নতুন দুশ্চিন্তা বেড়েছে বিধ্বস্ত কাঁচাঘরের বাসিন্দাদের। পানি কমতে থাকায় সড়ক ও কাঁচা বাড়িঘরের ক্ষত ভেসে উঠছে। ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও মানুষ এখন আবাসস্থল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বেশির ভাগ কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রামীণ ও আঞ্চলিক মহাসড়কও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
